সোমবার, ৭ ডিসেম্বর, ২০১৫

স্বাধীনতা

ক্ষুধার্তের স্বাধীনতা পেট ভরা খাদ্য,
ভরপেট খানা পেলে বাজে সুখ বাদ্য।
তৃষ্ণার্তের স্বাধীনতা জল চাই মুখে-
অন্ধজনে স্বাধীনতা দৃষ্টি দাও চোখে।

মায়ের স্বাধীনতা সাজানো রান্নাঘর-
বাবার স্বাধীনতা দুচালা টিনের ঘর।
পাখির স্বাধীনতা ফুড়ুৎ উড়াল দেয়া,
খুকুর স্বাধীনতা হাতে চিড়ার মোয়া।

পথের স্বাধীনতা একাকী বয়ে চলা,
পায়ের স্বাধীনতা ইচ্ছেধীন পা ফেলা।
দৃষ্টির স্বাধীনতা বিশাল আকাশটা,
শরতের স্বাধীনতা ফুটন্ত কাশ টা!

কথার স্বাধীনতা সত্য বলতে পারা,
ব্যথার স্বাধীনতা বিষাদে আত্মহারা।
ফুলের স্বাধীনতা নীরবে ফুটে উঠা,
ভুলের স্বাধীনতা অভ্রান্ত চিলেকোঠা।

চোখের স্বাধীনতা হঠাৎ পলক ফেলা,
মুখের স্বাধীনতা মুখোশ খোলামেলা।
সূর্যের স্বাধীনতা জ্বলন্ত রোদ্র তেজ,
হাওয়ার স্বাধীনতা সহজে সতেজ।

বিড়ালের স্বাধীনতা ইঁদুর ছানা ধরা,
ইঁদুরের স্বাধীনতা দাঁতে কেটে মরা।
দেয়ালের স্বাধীনতা কান পেতে থাকা,
শিল্পীর স্বাধীনতা মরমে ছবি আঁকা।

কবির স্বাধীনতা শব্দের দোলাচল-
পাঠকের স্বাধীনতা পাঠান্তে মনোবল।
ছবির স্বাধীনতা নিজেকে তুলে ধরা,
বন্যার স্বাধীনতা জাগিয়ে তুলা খরা।

মেঘের স্বাধীনতা বেগবান প্রত্যাশা-
আগের স্বাধীনতা এখন কোণঠাসা।
পরের স্বাধীনতা ক্রমশ মূল্যহীন-
ঘরের স্বাধীনতা অস্থির দিনে দিন।

চেতনার স্বাধীনতা দ্যোতনায় মগ্ন,
কালের স্বাধীনতা চলমান এ লগ্ন।
আঙুলের স্বাধীনতা যা ইচ্ছে লিখা-
শৈশবের স্বাধীনতা আজো মধুমাখা।

মনের স্বাধীনতা মগ্নতা মেপে যায়,
ক্ষণের স্বাধীনতা সময়ে নাহি পায়।
জনের স্বাধীনতা লোকারণ্যে অস্থির-
দু'দণ্ডের স্বাধীনতা মায়ায় অধীর।

জলের স্বাধীনতা যদিও বয়ে চলা,
বলের স্বাধীনতা দুর্বল মেরে ফেলা।
তোমার স্বাধীনতা খুঁজছ গ্লানি-ক্লেশ,
আমার স্বাধীনতা সোনার বাংলাদেশ।

কালের লিখন​
ডিসেম্বর- ২০১৫

(স্বাধীনতার ৪৪ বছরে কালের লিখনের ৪৪ পঙক্তি।)

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন